ঢাকার ডায়েরী_
ঢাকায় এক মাথা থেকে আরেক মাথায় যাওয়া বিশাল হ্যাপা। একটু দূর মানেই রাস্তায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা হাপিশ। এরপর টানা বসে থাকো এর মধ্যে। অন্য সময় টেনেও নেওয়া যেতো না, কিন্তু দাওয়াত খেতে গত আট দশদিনে কয়েক দফা এরকম রাস্তায় কাটালাম। রাস্তায় বসে থাকা চিন্তা করলে পুরো একদিন নাই!
আজকে বাসার কাছে একটা স্কুলের সামনে শিউলি ফুল পড়ে আছে আবিষ্কার করলাম। বহুদিন পর শিউলি ফুল দেখলাম। ছোট ছোট ফুলগুলো গাছের নীচে পড়ে ছিলো। ফুটপাত থেকে যা পারলাম, তুলে নিয়ে আসলাম। স্কুলটা রাস্তার ধারে। ছোট ছোট বাচ্চাদের খেলার কোন জায়গা নেই। ব্যাপারটাই এত প্যাথেটিক! একমাত্র বিল্ডিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা শীর্ন শিউলি গাছটাই একটু দেখার।
ছোটবেলায় চিটাগং এ একটা মিশনারি কিন্ডারগার্টেনে পড়তাম। ছোট স্কুল, কিন্তু দিব্যি এক চিলতে খেলার জায়গা ছিলো। এমনকি লুকোচুরি খেলার জায়গাও আমরা বের করে নিতাম। স্কুলে ঢুকার রাস্তার আগে আগে বেশ বড় একটা ড্রেনেজের ওপেন জায়গা ছিলো। স্কুলের দেয়াল ঘেঁষে সাদা কি জানি তীব্র সুগন্ধীময় ফুলের একটা গাছ ছিলো। সকালে যখন স্কুলে আসতাম, ওই ড্রেনেজের খোলা জায়গাটার পানি সাদা ফুলে ছেয়ে থাকতো। অদ্ভুত সুন্দর লাগতো দেখতে। এত বছর পর, এখনো সেই পানি ঢেকে থাকা ফুলের ছবিটা মাথায় আছে।
শিউলির রঙয়ের কম্বিনেশটা কি সুন্দর! সাদার নীচে একটু জাফরান। গন্ধের মতো দেখতেও কি মিষ্টি! এইবার এসে শিউলি ঘুরছিলো মাথায়। আজকে রাস্তায় হঠাত পাওয়া। বাসায় এসে বাচ্চাদের ফুল চেনালাম। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখি নেতিয়ে পড়েছে।
জীবনে ইস্যুজ এর শেষ নাই। আশেপাশের মানুষের সাথে রিলেশনশিপের ইস্যুজ, কাজকর্ম নিয়ে ইস্যুজ। শুধু এক কাপ চা হাতে বন্ধুদের সাথে খুব কম সময়ের গল্প রিফ্রেশিং। সহজ জিনিসকে আমরাই জটিল করি, আবার জটিল জিনিসকেও সহজে নেই। শুধু মনের সাথে বোঝাপড়া না হলেই মুশকিল।
চিটাগং এ কয়বছর ছিলেন আপু? কোন স্কুল?